পরকীয়া কী?
পরকীয়া (ইংরেজি : Adultery বা Extramarital affaire বাextramarutal sex) হলো বিবাহিত কোন ব্যক্তি (নারী বা পুরুষ) স্বামী বা স্ত্রী ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তির সাথে বিবাহোত্তর বা বিবাহবহির্ভূত প্রেম,যৌন সম্পর্ক ও যৌন কর্মকান্ড।
পরকীয়া প্রেম কেন হয়?
পরকীয়া প্রেমের অনেক কারণ আছে।যেমন -
(১) সময় ও একাকিত্বাঃ
পরকীয়ার প্রথম কারণ হলো আপনি হয়ত আপনার স্বামী বা স্ত্রী কে সময় দিতে পারছেন না।একে অপরকে পর্যাপ্ত সময় না দেওয়ার কারণে স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে একটা মানসিক দূরত্ব সৃষ্টি হয়।স্বামী বা স্ত্রী এমন এক জনকে খুজতে থাকে যার সাথে তার একাকীত্ব ঘুচে যায়। এমন কাউকে খুজতে থাকা থেকেই পরকীয়ার সূএপাত।
(২) বহুগামীতাঃ
ছেলে ও মেয়েরা কিন্তু একই কারণে পরকীয়ায় জড়ায় না।নারীরা মূলত ছেলেদের অর্থ সম্পদ, বুদ্ধি মওা ও শারীরিক চাহিদার জন্য পরকীয়ায় জড়ায় অন্য দিকে পুরুষেরা মূলত বহুগামিতা থেকে পরকীয়ায় জড়ায়।
(৩) শারীরিক চাহিদাঃ
প্রত্যেক স্বামী বা স্ত্রী র শারীরিক ও মানসিক কিছু চাহিদা থাকে।যখন এাব চাহিদা পূর্ণ হয় না,স্বপ্ন ভঙ্গের ব্যাথায় কষ্ট পায় মন-মূলত তখনই পরকীয়ার সূএপাত ঘটে।
(৪) উদাসীনতাঃ
একে অপরের প্রতি উদাসীনতা ধীরে ধীরে একজন স্বামী একজন স্ত্রী কে পৃথক করে দেয়। এতে বেড়ে যায় মানসিক দূরত্ব। যার কারণে শুরু হয় মনোমালিন্য। এবং অবশেষে পরকীয়া।
(৫) বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্টঃ
স্বামী বা স্ত্রী যদি চাকুরীজীবি হয়ে থাকে তাহলে তারা অফিসের বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে।বাংলাদেশের প্রায় নারী ই বিবাহের পর জীবনটা গৃহবধূ হিসাবে কাটিয়ে দেয়।এসব গৃহবধূর অনেকেই বিবাহ পরবর্তী একাকীত্ব ঘুচাতে তাদের কোন আত্মীয় বা প্রতিবেশীর সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়।
(৬) সঙ্গ দোষঃ
অফিস সহকর্মী বা বন্ধু বান্ধবের পরকীয়া গল্প শুনতে শুনতে হয়ত নিজের জীবনে সে উওেজনা খুজতে গিয়ে পরকীয়া জড়িয়ে পড়েন
পরকীয়া করার লক্ষণ-
আপনার সঙ্গী অন্য কারো সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে কিনা। কয়েকটি লক্ষণ দেখলেই বুঝতে পারবেন।
(১) আচরণে যদি হঠাৎ-আসা কোন পরিবর্তন দেখেন যেমন আচার-আচরণ, পোশাক,পছন্দ, অপছন্দ ইত্যাদি তে বদল এসেছে তাহলে বুজবেন তাঁর জীবনে নতুন কারো আগমন ঘটেছে।
(২) সঙ্গী যদি হটাৎ করে চোখো চোখ রেখে কথা বলা বন্ধ করে দেয় তাহলে বুঝবেন সমস্যা আছে। সঙ্গী যদি চোখে চোখ রেখে কথা বলতে অস্তিত্ব বোধ করছে বা ভয় পাচ্ছে তাহলে বুজবেন, সে হয়ত এমন কিছু কাজ করছে যা প্রতিনিয়ত আপনার কাছ থেকে লোকাতে হচ্ছে। কেননা চোখ দেখে মানুষের ভিতর টা বুঝা যায়
(৩) ফোন ব্যবহারের দিকেও নজর দিন।যদি দেখেন কারো সাথে চেট করার সময় মিটিমিটি হাসছে,বা আপনার সামনে মোবাইল ধরছেনা,বা অতি গোপনীয়তা দেখাছে তাহলেই বুঝবেন আপনর সঙ্গীর জীবনে নতুন কেউ এসেছে।
(৪) সঙ্গীর সঙ্গে এক ছাদের তলায় থাকছে। বা প্রায় ই দেখা হচ্ছে কিন্তু সেই আত্মিক টান অনুভব করছেন না।সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলার বিষয় যেন ফুরিয়ে আসছে।সঙ্গী আপনার কোন কথায় মনোযোগ দিচ্ছে না।তাহলে বুঝবেন তার মনটা অন্য কাউকে দিয়ে রেখেছে।
(৫) সঙ্গী যদি আপনার আপনর মেসেজের উওর দিতে দেরি করে। বা ফোন করলে তাকে সবসময় ব্যস্ত পান, তাহলে বুজবেন তাঁর জীবনে আপনার গুরুত্ব কমেছে।আর পরকীয়ায় লিপ্ত হয়েছে।
সর্বশেষে বলতে চাই, অনেকের জীবনেই পরকীয়া আসে।তবে ভেঙে পড়বেন না।সঙ্গী কে বুঝিয়ে বলবেন।নিজেদের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক টা বজায় রাখুন।
পরকীয়া থেকে মুক্তির উপায়-
এখন জেনে নেওয়া যাক পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়লে সেই পরকীয়া সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার উপায়
(১) তৃতীয় কোন ব্যক্তির সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে বা চালিয়ে গেলে এর শেষ পরিণত চিন্তা করোন।নিজেকে বুঝান, এই পরকীয়ার ফলে শুধু দুটো সম্পর্ক না,দুটো পরিবার, সন্তান সবায়ই ক্ষতিগ্রস্থ হবে।মাটিতে পা রেখে সিদ্ধান্ত নিন।
(২) নিজেকে জিজ্ঞেস করুন কেন অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছে। প্রতি পদক্ষেপে সঙ্গীর সঙ্গে মনের মিল না ও হতে পাড়ে।যে যে ব্যাপারে মিল আছে সেই দিক গুলে খুজে বের করুন।পরস্পরকে ভরসা জোগান, ভালো বন্ধু হয়ে উঠোন।
(৩) সম্পর্কে কোন অতৃপ্তি তৈরি হলে তা শোধরানোর প্রথম উপায় হলো কোন লুকোছাপা না করে সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলুন।নিজের আকাঙ্ক্ষার কথা জানান।খোলাখুলি কথা বলুন।
(৪) তৃতীয় কোন ব্যক্তির প্রতি শারীরিক আকর্ষণ অনুভব করা অস্বাভাবিক কিছু না।এর জন্য নিজেকে অকারণে শাস্তি দিবেন না।নিজেকে সংযত করতে না পারলে বাকি জীবনটা সুন্দর করে কাটাবেন কি করে।তাই অতীত কে ভুলে যান আর বর্তমানকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে জোড় দিন।
(৫) তৃতীয় কোন ব্যক্তির সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে, অনেক সময় নিজের আপরাধ বোধ লাজ করে। সঙ্গীকে সব কথা খুলে বলার মত মানসিক জোড় ও থাকেন অনেকের।এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলেন,মন খারাপ না করে, বিশ্বাসযোগ্য কোন মানুষকে সবটা খুলে বলা।
সংযম,আত্মা বিশ্বাস, মানসিক বল ও ধৈয্য ধারণ করলে অবশ্যই এই পরকীয়া সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব ইনশাল্লাহ।
পরকীয়া প্রেমের আইন-
মানব সমাজে এটি লঘু বা গুরু ভাবে নৈতিবাচক হিসেবে গণ্য। পাশ্চাত্য আধুনিক সমাজে এর প্রতি নেতিবাচক মনোভাব বজায় রাখলে এটি আইন অপরাধ বলে বিবেচিত হয় না,তবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরকীয়ার কারী ব্যক্তির বিবাহিত সঙ্গী তার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য কোর্টে আবেদন করতে পারেন। তবে ইসলামিক রাষ্ট্র সমূহ এর জন্যই কঠোর শাস্তি বিধান রয়েছে। যা হলো পাথর মেরে মৃত্যুদন্ড প্রদান।
2 মন্তব্যসমূহ
gd
উত্তরমুছুনwelcome
উত্তরমুছুন